বিজেএসসির ওয়েবসাইট থেকে জুডিশিয়ারির সিলেবাস নামিয়ে সিলেবাসটা আগাগোড়া ৫ বার পড়ে ফেলেন।
.
দ্বিতীয় কাজঃ
৩য় - ১৩ তম বিজেএস এর প্রশ্ন ব্যাংক সংগ্রহ করে প্রিলি, রিটেনের প্রশ্নগুলো সলভ করুন। একই সাথে ১০ ম থেকে ৪০ তম বিসিএস এর প্রিলিমিনারি প্রশ্নব্যাংক সলভ করুন।
তৃতীয় কাজঃ
সলভ করা প্রশ্নের সাথে পড়া সিলেবাস মিলিয়ে প্রতিটা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো চিহ্নিত করে পর্যায়ক্রমে গুরুত্ব অনুসারে (***/ **/*) এভাবে মার্ক করুন।
.
চতুর্থ কাজঃ
Major Law, Minor Law, General - এই তিন ক্যাটাগরিতে দিনের সময়গুলো ভাগ করে একটা নিজের মানানসই রুটিন তৈরি করুন। একদিন ১৮ ঘন্টা পড়ে তিন দিন না পড়ার চেয়ে প্রতিদিন অন্তত ৪ ঘন্টা পড়াও অনেক ভালো৷ প্রথমেই, বেশি চাপ নিতে যাবেন না রুটিনে৷ সপ্তাহান্তে ৪ ঘন্টা দৈনিক, এরপর ৬ ঘন্টা দৈনিক, এরপর ৮ ঘন্টা... এভাবে নিজের সক্ষমতা বাড়ান।
.
পঞ্চম কাজঃ
প্রতিদিন Math, বিজ্ঞান ( কমার্স / অন্য ব্যাকগ্রাউন্ডের হলে), বাগধারা, প্রবাদ প্রবচন, Phrases & Idioms, synonym & Antonym পড়ুন৷ অন্তত দিনে ১০ টা হলেও৷
.
ষষ্ঠ কাজঃ
আর্ন্তজাতিক এবং বাংলাদেশ বিষয়াবলির জন্য প্রতিদিন অন্তত ১ ঘন্টা পত্রিকা পড়বেন৷ ২ টা পত্রিকা বিশেষত৷ প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার৷ সব পড়তে যাবেন না পত্রিকায়। প্রথম পেইজ, সম্পাদকীয় পেইজ, আর্ন্তজাতিক পেইজ, অর্থনীতির পেইজ - এসবই মূলত পড়তে হয় ৷ ডেইলি স্টার এর Tuesday তে করা "Law & Order" পেইজটা অবশ্যই পড়বেন।
.
সপ্তম কাজঃ
পড়া ভুলে যাবেন স্বাভাবিক। এটাকে মেনে নিবেন। তাই রিভিশনের উপর অধিক জোড় দিন। ৪ ধাপে এটা আপনি করতে পারেন৷ পর্যায় -১- দিনের শেষে, রাতে ঘুমানোর আগে দিনের সব পড়া রিভিশন, পর্যায় - ২ - দ্বিতীয় দিন প্রথম দিনের সকল পড়ার রিভিশন, পর্যায় -৩ - ১ সপ্তাহ পর সম্পূর্ণ সপ্তাহের পড়ার রিভিশন, পর্যায় -৪- ১ মাস পর মাসের সকল পড়ার রিভিশন। এভাবে ৪ টি ধাপ শেষ করুন।
.
অষ্টম কাজঃ
বেয়ার এ্যাক্ট ভিত্তিক পড়বেন। বেয়ার এ্যাক্টের প্রতিটা উদাহরণ খুব ভালোভাবে পড়ে যাবেন। অপ্রয়োজনীয় বই না পড়ে প্রতি সাব্জেক্টের জন্য একটা করে ভালো রাইটারের বই পড়বেন যেন একটা বইই যথেষ্ট হয়। মনে রাখবেন, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় কি পড়তে হবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল কি পড়তে হবে না - তা চিহ্নিত করতে পারা।
.
নবম কাজঃ
রিটেনে খুব কম সময় পাবেন। অত বই নিয়ে ঢাকাতেও যাওয়া সম্ভব হবে না৷ নিয়ে গেলেও দিনে রিভিশন শেষ করতে পারবেন না। তাই এখন থেকেই সব বিষয়ের জন্য আলাদা খাতা তৈরি করে টপিকভিত্তিক সংক্ষেপে নোট নিন যেন রিটেনে নোট খাতাটা পড়েই পরীক্ষা দিয়ে আসতে পারেন। মনে রাখবেন, মূল পরীক্ষা কিন্তু রিটেন। রিটেনে বাংলায় / ইংরেজিতে উত্তরে কোন বৈষম্য নেই। তবে, আপনি এখন সিদ্ধান্ত নিয়ে নিন কোন বিষয় বাংলায় দিবেন, কোন বিষয় ইংরেজিতে৷ সে অনুযায়ী বাংলা বই / ইংরেজি বই কিনে প্রস্তুতি নিবেন৷ পরীক্ষার পূর্বে এ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দে থাকার কোন সুযোগ নেই । ভাইবার পূর্বে ইনশাআল্লাহ একটা গাইডলাইন দিব আপনাদের ৷ তাই ভাইবা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই৷
.
দশম কাজঃ
সৃষ্টিকর্তার উপর নির্ভর করে নিজের পরিশ্রম অব্যাহত রাখুন। মডেল টেস্ট পরীক্ষায় ভালো নাম্বার আসছে না তার মানে এই না যে, আপনি হতাশ হবেন। এর অর্থ হচ্ছে আপনার এখনো প্রস্তুতির সুযোগ আছে চূড়ান্ত পরীক্ষার পূর্বে। হতাশা বা ক্লান্তি আসলে নিজের পরিবারকে সময় দিন। নিজের স্বপ্নকে নিয়ে ভাবুন - দেখবেন হতাশা কেটে যাবে৷
.
সর্বশেষ কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ, নিজেকে সময় দিন। ফেইসবুক /সোশ্যাল মিডিয়াতে না পারতে না আসাই ভালো এই সময়টায় ৷ অনেকে মনে করতে পারেন, অনলাইনে থাকলে অনেক তথ্য পাওয়া যায়। বিশ্বাস করেন, এই সামান্য কটা তথ্যের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াতে থেকে আপনি আপনার মোক্ষম সময়গুলো নষ্ট করছেন। সফলতার হাজারটা সূত্র নেই । তাই, অধিক সন্ন্যাসীতে যেন গাঁজন নষ্ট না হয় সেটা খেয়াল রাখবেন।
.
আপনাদের সকলের জন্য শুভকামনা। আমরা আপনাদের অপেক্ষায়। 💙
.
হাসান সাকিল।
মেধাক্রম - ২১
সহকারী জজ ( সুপারিশপ্রাপ্ত ) , ১৩ তম বিজেএস।