রিমান্ডের আবেদন এবং ক্ষমতার অপব্যবহার। Application for Remand and the Abuse of Power

0
লেখক: Maruf Hossen Jewel
একজন পুলিশ অফিসার রিমান্ডের আবেদন করেন এই মর্মে যে, আসামী আমলযোগ্য অপরাধের সাথে যুক্ত এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড প্রয়োজন। ধারা ১৬৭ এর উপ-ধারা (২) এ যদিও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের কথা উল্লেখ নাই, তবুও এটা এখন একটা প্রথায় পরিণত হয়েছে এবং আসামীকে রিমান্ডে দেয়া হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তথ্য উদঘাটন করার জন্য। 
ম্যাজিস্ট্রেট কখন রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করবেন বা কখন তা নাকচ করবেন, তার নির্দিষ্ট কোন নির্দেশনা নাই। এবং আইনের এই দূর্বলতা পুলিশ অফিসার এবং ম্যাজিস্ট্রেটকে ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ দেয়।


পুলিশ অফিসার ফৌজদারী কার্যধাবিধি-১৮৯৮ এর ১৬৭ ধারা আওতায় যুক্তিহীন রিমান্ডের আবেদন করে কখনও শাসন বিভাগের দ্বারা প্রভাবিত বা নির্দেশিত হয়ে, আবার কখনও ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে ক্ষুব্ধ হয়ে। 

যথাযথ নির্দেশনার অনুপস্থিতিতে ম্যাজিস্ট্রেটগণও হয় শাসন বিভাগ দ্বারা নির্দেশিত হয়ে অথবা তোতা পাখির মত পুলিশ অফিসারের বিবরণপত্র অনুসরণ করে আসামীকে পুলিশ হেফাজতে বা জেলে আটক রাখার নির্দেশ দেয়।

আসামীকে রিমান্ডে নেয়ার পক্ষে যুক্তি হলো এই যে, সামাজিক প্রয়োজনে যদি বল প্রয়োগ করা না হয় তবে, শক্ত খোলের অপরাধীর নিকট হতে কোন তথ্য বা ইঙ্গিত পাওয়া যাবে না। 

অন্যদিকে, রিমান্ডের মাধ্যমে স্বীকারোক্তি আদায় করা হলে আইনগতভাবে উক্ত স্বীকারোক্তি স্বেচ্চাপ্রণোদিত হয় না। আর এরুপ স্বীকারোক্তি যা বল প্রয়োগের মাধ্যমে আদায় করা হয় তা পরবর্তীতে সাক্ষ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায় না।

সংবিধানের ৩৫(৪) অনুচ্ছেদ এ বলা হয়েছে যে, কোন ব্যক্তিকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য বাধ্য করা যাবে না।

তাই ফৌজদারী কার্যধাবিধি-১৮৯৮ এর ১৬৭ ধারা (রিমান্ডের বিধান) সংবিধানের পরিপন্থী। এই ফৌজদারি কার্যবিধি বৃটিশ সরকার কর্তৃক পাশ করা হয়েছিল ১৮৯৮ সালে যখন মৌলিক অধিকার বিষয়ক কোন অধিকার ছিল না, যা এখন আমাদের সংবিধানে আছে।

পুলিশ রিমান্ডের বিধান সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৫ এর বিধানানুযায়ী অবৈধ মনে হয় এবং ইহাই ব্যাপকভাবে BLAST মামলায় আলোচিত হয়েছে যদিও পুলিশ রিমান্ডের বিধান যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রায় সব দেশেই আছে।

সুতরাং এ বিষয়ে সঠিক কি তা পরিস্কার থাকা অত্যাবশ্যক। BLAST মামলায় আপীল বিভাগের রায় কি হয় তার জন্য আমাদেরকে অপেক্ষা করতে হবে।
আরো পড়ুন:

নোট: ভাল লাগলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না

লেখক: Maruf Hossen Jewel
All Social Page: 

আমার সাইটঃ MHJ & Associates
নোট: আমাদের ফেসবুক Lawyer's Club Rajshahi পেজ এ লাইক দিয়ে সাথে থাকুন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

buttons=(Accept !) days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !
To Top