তথ্য সংক্ষেপ:
- বাংলাদেশ গণপরিষদ আদেশ জারী হয় ২২শে মার্চ আর গেজেট হয় ২৩শে মার্চ ১৯৭২
- গণপরিষদের মোট সদস্য ছিল ৪৬৯ ( জাতীয় পরিষদ ১৬৯+ প্রাদেশিক পরিষদ ৩০০) কিন্তু এদের মধ্য থেকে ৫ জন পাকিস্তান আর্মি কর্তৃক নিহত হন, ২ জন পাকিস্তানের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেন (চাকমা রাজা ত্রিদিব রায় ও নুরুল আমীন), ৪ জন দালাল আইনে জেলে ছিলেন এবং ২৩ জন দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার কারনে গণপরিষদের সদস্য সংখ্যা হয় ৪৩০ জন।
-গণপরিষদের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ১০ এপ্রিল ১৯৭২। ৪৩০ জনের মধ্যে ১৯ জন আওয়ামীলীগ থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার কারনে গণপরিষদের সদস্যপদ হারান। ৩ জন আওয়ামীলীগ থেকে পদত্যাগ করেন। ৪ জন মৃত্যুবরণ করেন এবং ১ জন কূটনৈতিক মিশনে চাকুরী গ্রহণ করায় গণপরিষদের সদস্য সংখ্যা হয় ৪০৩ জন। এই ৪০৩ জনের ৪০০ জন ছিলেন আওয়ামীলীগের এবং বাকী ৩ জনের ১ জন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির(ন্যাপ-মোজাফফর) বাবু সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত ও ২ জন স্বতন্ত্র।
- গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনের সভাপতি ছিলেন মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ। আওয়ামীলীগের সভাপতি ছিলেন।
- গণপরিষদের সংসদ নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
গণপরিষদের স্পীকার ছিলেন কারা?
- শাহ আব্দুল হামিদ; স্পীকার।
- মোহাম্মাদ উল্লাহ; ডেপুটি স্পীকার। স্পীকার শাহ আব্দুল হামিদ মারা গেলে মোহাম্মদ উল্লাহ স্পীকার হন এবং জনাব বায়তুল্লাহ হন ডেপুটি স্পীকার।
জেনে রাখুন:
গণপরিষদ কিভাবে গঠিত হলো?
What is MCA?
জাতীয় পরিষদ সদস্যদের ইংরেজিতে বলা হয় Member of National Assembly (MNA).
আর প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের বলা হয় Member of Provincial Assembly (MPA).
উপরের দুই শ্রেণির সদস্য নিয়ে গঠিত হয় গণপরিষদ যাকে ইংরেজিতে বলা হয় Member of Constituent Assembly (MCA). এই গণপরিষদ মুজিবনগর সরকার গঠন করেন এবং বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা অনুমোদন করেন।
গণপরিষদ ছিল কয়টি?
প্রথমে গণপরিষদ গঠিত হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল। সেই গণপরিষদের কাজ ছিল:
- মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করা
- সংবিধান প্রণয়ন।
কিন্তু সংবিধান প্রণয়ন তখন সম্ভব হয়নি। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী সংবিধান রচনার উদ্দেশ্যে গণপরিষদ আদেশ জারি করেন।আর সার্বভৌম বাংলাদেশের গণপরিষদের প্রথম বৈঠক বসে ১৯৭২ সালের ১০ এপ্রিল।
আরো জেনে রাখুন:
১৯৭০ সালের পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে পূর্বপাকিস্তান আওয়ামীলীগ ২টি আসন পায়নি। সেই ২টি আসনের একটি ময়মনসিংহের মুসলিম লীগ প্রার্থী নুরুল আমীনের অন্যটি স্বতন্ত্র প্রার্থী ত্রিদিব রায়ের।
নুরুল আমীন উপাখ্যান :
ভাষা আন্দোলনের সময় পূর্ব পাকিস্তানের মূখ্যমন্ত্রী ছিলেন নুরুল আমীন। ১৯৭১ সালে নুরুল আমীন পাকিস্তান চলে যান। পাকিস্তানের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন এবং সেখানকার প্রধানমন্ত্রী ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট হন। পাকিস্তানেই ১৯৭৪ সালে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
ত্রিদিব রায় উপাখ্যান :
ত্রিদিব রায় চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষের বাবা। ব্যারিস্টার দেবাশীষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ফখরুদ্দিনের বিশেষ সহকারী ছিলেন। ত্রিদিব রায় চাকমা রাজা ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করেছিলেন। ২০১২ সালে ইসলামাবাদে মৃত্যুবরণ করেন।