পৃথিবীর সব কিছুই কোন না কোন নিয়ম বা আইনের অধীনে পরিচালিত হয়,মানুষের জীবনও এ সকল আইনের বাইরে নয়। এ আইন ভঙ্গ করে যখন অপরাধ সংগঠিত হয় তখনি সৃষ্টি হয় বিশৃংখলা ও অশান্তি।
আইন পেশা ও সমাজে আইনজীবীর প্রয়োজনীয়তা |
আইন একটি বিমূত্র বিষয়, যাকে স্পর্শ কিংবা দেখা যায় না তবে অনুভব করা যায়। বিশ্বাস করা যায়। শ্রদ্ধা করা যায়।
কিছু আইন প্রকৃতিগত কিছু আইন সমাজগত, কিছু আইন ঈশ্বর কতৃক আবার কিছু আইন মানুষ কতৃক সৃষ্টি হলেও বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ মানুষের কাছে পার্লামান্টে বা সংসদে পাশ করা কোন নতুন নিয়ম বা রুলই হল আইন। সাধারন মানুষের কাছে আইনের এই পরিচিতির সার্বজনীনতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও আইনের অস্তিত নিয়ে কোন প্রশ্ন চলে না।
হামুরাবি, মিশরীয়, রোমানদের পরে কোরআনিক নিয়ম- নীতি, আদেশ- উপদেশ সবকিছু মিলে সময়ের প্রয়জনে আইন তৈরি হয়েছে।
আইনের নির্দিষ্ট কোন সংজ্ঞা না থাকলেও আইনের প্রতি সাধারণ মানুষের ধারনা বিভিন্ন জনের কাছে বিভিন্ন ধরনের। তবে আর যাই হউক আইনের সাথে যুক্তি, দর্শন, চিন্তা শক্তি, বিজ্ঞান ও পর্যবেক্ষন আষ্টে পিষ্টে জুড়ে আছে।
আইন ভঙ্গ তথা অপরাধ সংঘটনকে নিয়ন্ত্রন করে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য অপরাধ ও অপরাধের কারন উদঘাটন এবং অপরাধীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহন করতে হয়।
আর এ কাজে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা যারা পালন করে তারা হলেন আইনজীবী, যারা অপরাধের সামগ্রিক পর্যালোচনা, কোর্টের সামনে সংক্ষুব্ধ ব্যাক্তি, অপরাধী ও সাক্ষী সহ সংশ্লিষ্টদেরকে প্রশ্নোত্তর এবং নিজেদের মাঝে নানা রকম আইনি যুক্তিতর্কের মাধ্যমে প্রকত সত্য এবং অপরাধী চিহ্নিত করার মাধ্যমে আদালতকে তার বিচারিক কাজে সাহায্য করে থাকেন।
সমাজে এ পেশার প্রয়োজনীয়তাঃ
সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আইনজীবীর ভুমিকা অপরিসীম। মানুষের জীবনে ব্যাক্তিগত পর্যায় থেকে শুরু করে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে প্রতিটি ক্ষেত্রেই দ্বন্দ, ফ্যাসাদ, হানাহানি একটি অনস্বীকার্য বাস্তবতা। তাই এসব সমস্যার সমাধানে রয়েছে আদালত ব্যাবস্থা।
আর আদালত ব্যাবস্থার মাধ্যমে যাবতীয় সমস্যার সুষ্ঠ, শান্তিপূর্ন ও যৌক্তিক সমাধানের মাধ্যমে প্রকৃত সত্যের প্রকাশ ও বিশৃংখলামুক্ত সমাজ বিনির্মানে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হলেন আইনজীবীগন। আইনজীবীরা আদালতের সামনে পক্ষে-বিপক্ষে দাঁড়িয়ে স্বপক্ষের ঘটনাসমূহ ও যুক্তি উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য প্রতিষ্ঠা ও সঠিক বিচারে আদালতকে সাহায্য করে থাকেন।
এছাড়া আইনজীবীগন সমাজের একটি সম্মানজনক আসনে অধিষ্ঠিত থাকায় ছোট ছোট সমস্যা সমাধানে ব্যাক্তিগত উদ্যেগ নিয়ে এগিয়ে আসতে পারেন এবং লোকেরা তাদের এসব সমাধান মূলক উদ্যেগকে স্বাগত জানায়, এমনকি তারাও নিজেদের সমস্যাদি সমাধানের জন্যে তাদের (আইনজীবী) নিকট ধর্না দিয়ে থাকেন।
জনসেবা করার সুযোগঃ
সমাজে এই পেশার গুরুত্ব যেমন অপরিসীম তেমনই জনগণের পাশে দারিয়ে তাদের সেবার্থে ভুমিকা পালনের মত আইনজীবীর অভাবও তেমন এর মাঝে যারা আছে তাদের মাঝে অনেকেরেই নৈতিকতা ও শিষ্টাচারের অভাবও তেম্ন।অন্যদিকে জীবনের বিবিধ ক্ষেত্রের সমস্যা নিয়ে কখনো পক্ষ কখনো প্রতিপক্ষ হয়ে আদালতের আশ্রয় নিতে হয় প্রায় প্রতিটি মানুষকেই।
আর আদালত কেন্দ্রিক এবং আইনগত অন্যান্য সমস্যাগুলোই মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা, কযার স্মাধান তার নিজের পক্ষে তো নয়ই বরং অন্য কোন রথি মহরথি দিয়েও সম্ভব নয়, একমাত্র আইনজীবী ছাড়া।
তাই যোগ্য ও ভাল আইনজীবী প্রয়োজনে ছুটে বেড়াতে হয় গুটিকয়েক আইনজীবীর দ্বারে দ্বারে
সুতরাং খুব সহজেই আমাদের নিকট অনুমেয় হবার কথা যে, জনসেবার বিপুল সুযোগ ও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে আইন পেশায়।
সমাজের সকল বিভাগে এবং মানব জীবনের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে আজ অপরাধ ও সমস্যা জেকে বসে আছে, বযার মোটামুটি একটি স্বচ্ছ চিত্র আইনজীবীর চোখে ধরা পড়তে বাধ্য। মজাটা এখানেই। মানুষের ব্যাক্তিগত ও পারিবারিক জীবনের একান্ত সমস্যাগূলো যা সে অন্যদেরকে বলতে পারে না, বলতে চায় না- তা অনায়াসে আইনজীবীর নিকট উগরে দিয়ে থাকে।
একজন কোটিপতির জীবনের সমস্যা এবং একজন নিঃস্ব সহায়সম্বলহীন সমাজের নীচু তলার মানষের সমস্যার স্বরূপগুলো কেমন তার একেবারে গভীরে প্রবেশ করে হয়তো বা নিজেকে একজন আইনজীবী নতুনভাবে আবিষ্কার করতে সক্ষম হয় কখনো কখনো।
এসব দিক সহ সকল মানুষের মাঝে শ্রদ্ধাম্মান, আত্বমর্যাদা এবং সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আত্বতপ্তির সাথে সমাজে মাথা উচু করে বেচে থাকার মজাতো আছেই।