আমার ভাইয়ের স্ত্রী একটি সম্পর্কে জড়িয়ে বিয়ে করে ফেলেছেন। এখন যাওয়ার সময় ভাইয়ের তিন বছরের ছেলেকে নিয়ে গিয়েছে। ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে কখনো কোনো ঝগড়া-বিবাদ হয়নি। আমার ভাই চাচ্ছে ছেলেকে নিজের কাছে রাখতে।

0
আইনি সমস্যা ও সমাধান: ০৩/২০২১
প্রশ্ন: আমার ভাইয়ের স্ত্রী একটি সম্পর্কে জড়িয়ে বিয়ে করে ফেলেছেন। এখন যাওয়ার সময় ভাইয়ের তিন বছরের ছেলেকে নিয়ে গিয়েছে। ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে কখনো কোনো ঝগড়া-বিবাদ হয়নি। আমার ভাই চাচ্ছে ছেলেকে নিজের কাছে রাখতে।

উত্তর: অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন ১৮৯০ অনুসারে ১৮ বছরের কম বয়সী সন্তানকে নাবালক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আর ওই সন্তানের অভিভাবক হলেন তিনি, যিনি ওই সন্তানের শরীর কিংবা সম্পত্তি অথবা উভয়ের তত্ত্বাবধান ও ভরণপোষণে আইনগতভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত।
এই আইন অনুযায়ী নাবালকের স্বাভাবিক এবং আইনগত অভিভাবক হলেন পিতা। তবে নাবালকের সার্বিক মঙ্গল ও কল্যাণের গুরুত্বের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশে প্রচলিত মুসলিম আইন অনুযায়ী সন্তানের মাকে নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত সন্তানের জিম্মাদারির অধিকার দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ছেলেশিশুকে সাত বছর পর্যন্ত মা তাঁর জিম্মায় রাখবেন। সন্তানের জিম্মাদারির নির্দিষ্ট বয়স পার হলেই যে সন্তান বাবার জিম্মায় যাবে, তা নয়, সাত বছর অতিক্রম করার পরও ছেলেসন্তানের সার্বিক কল্যাণের বিষয়টি বিবেচনা করে সন্তানের হেফাজত পুনরায় মায়ের ওপর ন্যস্ত হতে পারে।

নাবালক সন্তানের ভরণপোষণ, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ অন্যান্য ব্যাপারে নৈতিক ও অর্থনৈতিক সব সুবিধা প্রদান করা একজন অভিভাবকের দায়িত্ব। প্রচলিত একটি ধারণা রয়েছে যে মা পুনরায় বিয়ে করলে নাবালক সন্তানের জিম্মার অধিকার হারান। কিন্তু ক্ষেত্রবিশেষে আদালত অবস্থা বিবেচনা করে নাবালককে তার মায়ের পুনর্বিবাহ হলেও তাঁর জিম্মায় রাখার আদেশ দিতে পারেন।

যেহেতু বাচ্চাটির বয়স তিন বছর, আইন অনুযায়ী সে মায়ের হেফাজতেই থাকবে। আপনার ভাই তাঁর সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে আপস-মীমাংসার মাধ্যমে তাঁর বাচ্চাকে নিজের কাছে আনতে পারেন। তিনি রাজি না হলে নাবালক সন্তানের জিম্মাদারির জন্য পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। পারিবারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে জেলা জজের আদালতে আপিল করা যায়। আদালতের মাধ্যমে শিশুর বিষয়ে কোনো আদেশ প্রদান করা হয়ে থাকলে যদি কেউ আদালতের এখতিয়ারের সীমা থেকে তাঁকে সরিয়ে নেন, তাহলে আদালতের আদেশে ওই ব্যক্তি অনূর্ধ্ব এক হাজার টাকার জরিমানা অথবা ছয় মাস পর্যন্ত দেওয়ানি কারাবাস ভোগ করতে বাধ্য থাকবেন। ওই দেওয়ানি কারাবাসের খরচসহ মামলার খরচ এই আইনের মোতাবেক হাইকোর্ট ডিভিশনে প্রণীত কোনো বিধি সাপেক্ষে যে আদালতে মামলাটি চলছে, তার বিবেচনার ওপর নির্ভর করে আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।
Maruf Hossen Jewel
M.S.S, B.S.S, LL.B, LL.M
Rajshahi Judge Court, Rajshahi.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

buttons=(Accept !) days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !
To Top