জমি ক্রয়ের পুর্বে ১০টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করুন:

0
১। যার কাছ থেকে জমি জমি ক্রয় করবেন তার কাছ থেকে :
ক) সি.এস খতিয়ান, 
খ) আর.এস খতিয়ান, বি.এস/ সিটি জরীপের খতিয়ান
 গ) সর্বশেষ পর্যন্ত যে সকল বেচাকেনা হয়েছে সেগুলোর বায়া দলিল, 
ঘ) নামজরী খতিয়ান 
ঙ) হাল সনের খাজনার দাখিলাসহ সংশ্লিষ্ট সকল কাগজপত্র।

২। এ কাগজগুলো দিয়ে মালিকানা স্বত্ত্ব পরিক্ষা করে দেখতে হবে। 
যেমন- সি.এস খতিয়ান, এস.এ খতিয়ান, আর.এস/বি.এস খতিয়ান ও সিটি জরীপের খতিয়ান পাশাপাশি মিলিয়ে দেখতে হবে জেলা, মৌজা, থানা, দাগ নম্বর ইত্যাদি মিলে কিনা। 
যদি না মিলে তবে ঐ মৌজার সি.এস নকশা,আর.এস./বি.এস ও ঢাকা সিটি জরীপের নকশা জোগাড় করে তাদের তুলনা করে দেখতে হবে সি.এস দাগ ভেঙে কয়টি আর.এস. দাগ বা সিটি জরীপের দাগ সৃষ্টি হয়েছে এবং সেগুলো কি কি। 
এরপর ভূমি রেকর্ড রুম হতে ঐ খতিয়ানগুলোর সই মুহুরী নকল নিয়ে মালিকের নাম নিশ্চিত করতে হবে। 
যদি সি.এস খতিয়ানে মালিকের নামের সহিত এস.এ বা আর.এস খতিয়ানের মিল না পাওয়া যায় তবে দেখতে হবে সি.এস এর মালিক জমিটি কি করলেন। তিনি যদি বিক্রি, দান, হেবা, এওয়াজ বা কোনরূপ হস্তান্তর করে থাকেন তবে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে তল্লাশি দিতে হবে এবং হস্তান্তর দলিলের সই মুহুরী নকল বের করতে হবে। একইভাবে পরবর্তী সকল খতিয়ানের মালিকানার ক্ষেত্রে তা পরিক্ষা করতে হবে। কিভাবে হস্তান্তরিত হয়ে রেকর্ড প্রস্তুত হয়েছে।
৩। বিক্রেতার জমিটি তার অন্যান্য শরীকদের সঙ্গে অংশনামা হয়েছে কিনা তা দেখতে হবে। বিক্রেতা যদি বলেন যে আপোষমুলে বণ্টন হয়েছে, কিন্তু না রেজিস্ট্রি হয়নি, তবে ফারায়েজ অনুযায়ী বিক্রেতা যেটুকু অংশের দাবিদার শুধু সেটুকু কিনাই নিরাপদ হবে।
৪। বিক্রেতা যদি তার কিনা জমি বিক্রি করতে চান তবে রেকর্ডীয় মালিক থেকে পরবর্তীতে হস্তান্তরিত সকল বায়া দলিলসমুহে বর্ণিত স্বত্ব ঠিক আছে কিনা তা দেখতে হবে। ঐ দলিলে বর্ণিত খতিয়ান ও দাগ নম্বর বের করে তাও বিশ্লেষন করতে হবে। সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রি অফিস ও ভূমি অফিস থেকে সই মুহুরী নকল নিয়ে তা যাচাই করতে হবে।
৫। যাচাই করতে হবে জমিটি খাস, পরিত্যক্ত, শত্রু সম্পত্তি কিনা বা সরকার কোন কারনে অধিগ্রহণ করেছে কিনা।
৬। জমি বিক্রেতার মালিকানা স্বত্ব বা বিক্রয়ের বৈধ অধিকার আছে কিনা তা দেখতে হবে। অর্থাৎ জমির মালিক নাবালক বা অপ্রকৃতিস্থ কিনা লক্ষ্য রাখতে হবে। নাবালক হলে আদালতের মাধ্যমে অভিভাবক নিযুক্ত করে বিক্রয়ের অনুমতি নিতে হবে।
৭। কিনার আগে সব অংশীদারকে নোটিশ দিতে হবে যাতে পরবর্তীতে অগ্রক্রয়/প্রিয়েমশান মোকদ্দমা হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে।
৮। এবার দেখতে হবে বিক্রেতা ঐ জমির ব্যাপারে কাউকে আমমোক্তার নিযুক্ত করেছেন কিনা, এছাড়া ব্যাংক কিংবা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে বন্ধক রেখেছেন কিনা। আর উক্ত জমিটি নিয়ে কোন মাোমলা বিচারাধীন আছে কিনা কিংবা কোন প্রকার মামলা নিস্পত্তি হয়েছে আছে কিনা তা দেখাও বাঞ্ছনীয়।
৯। জমির মালিকানা স্বত্ব সঠিক পাওয়ার পর আপনাকে সি.এস/আর.এস/বি.এস/ঢাকা সিটি জরীপের নকশা নিয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখতে হবে নকশা অনুযায়ী ঐ জমিটি সেই দাগের কিনা।
১০। এরপর বিক্রয়ের জন্য নির্দিষ্ট জমিটি বর্তমানে কে দখলে আছে, কিনতে গেলে কোন কারনে ভোগ দখলে বাধাগ্রস্থ হবে কিনা কিংবা রাস্তা বা পথাধিকারের কোন বাধা নিষেধ আছে কিনা তাও সরেজমিনে যাচাই করে নিতে হবে।
সবকিছু সঠিক পাওয়া গেলে তারপর রেজিস্ট্রি করার জন্য দলিল প্রস্তুত করতে হবে। দলিল লিখার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক। এখন আগের মতো বর্ণনামূলক দলিল প্রস্তুত করা হয়না। নতুন আইনে ছকাকারে যেভাবে কলামগুলো পূরণ করতে হয় সেগুলোর প্রতিটি কলাম সঠিক জেনে পূরণ করা উচিত। এক্ষেত্রে ভূমি আইন, হেবা আইন, রেজিস্ট্রেশন আইন জানা লোকদের দিয়ে দলিল প্রস্তুত করাই ভালো। দলিল রেজিস্ট্রির সময় রেজিস্ট্রি অফিসের সত্যায়িত এক কপি সহমুহুরী নকল নিজের কাছে রেখে দিন এবং সময়মত মূল দলিল উঠিয়ে নিবেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

buttons=(Accept !) days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !
To Top