তামাদি আইন-১৯০৮ এর ৫ ধারার অধীন তামাদি মওকুফের আবেদন মঞ্জুর করতে আদালত বাধ্য না। যদিও এই সম্পর্কে ৫ ধারায় কিছু বলা হয় নাই কিন্তু ৫ ধারায় তামাদি মওকুফের আবেদন বা প্রত্যাখ্যানের বিষয়টি আদালতের বিবেচনামূলক ক্ষমতা।
এইক্ষেত্রে
‘রফিকুল ইসলাম বনাম বাংলাদেশ’ মামলায় হাইকোর্ট বিভাগ বলেছে যে, বিলম্ব মওকুফ আদালতের বিবেচনার উপর নির্ভর করে। যদি আদালত বিলম্বের কারণ এবং ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হন, তাহলে বিলম্ব মওকুফ করতে পারেন। তবে কোনো বিলম্ব মওকুফের আবেদন মঞ্জুর করার ক্ষেত্রে কতদিন বিলম্ব হয়েছে সেটা প্রশ্ন নয়, কিভাবে এবং সরল বিশ্বাসে বিলম্বের বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হয়েছে কিনা সেটাই মূল বিবেচ্য বিষয়। যদি বিলম্বের ব্যাখ্যা সন্তোষজনক হয় এবং সরল বিশ্বাসে করা হয় তাহলে আদালত বিলম্ব মওকুফ করতে পারেন।
মোহাম্মাদ ইসহাক বনাম রুহুল আমীন গং, এই মামলায় হাইকোর্ট বিভাগ বলেছে যে, যদি দরখাস্তকারী বিলম্ব বিষয়ে আদালতকে সন্তুষ্ট করতে পারে এবং উক্ত বিষয়ে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারে তাহলে আদালত উপযুক্ত মামলায় বিলম্ব মওকুফ করতে পারে। এটা আইনের মীমাংসিত নীতি যে, প্রত্যেক দিনের বিলম্বের ব্যাখ্যা করতে হবে। তবে প্রত্যেক দিনের বিলম্বের কারণ ব্যাখ্যা করার বিষয়টি সহজাতভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে যেন ন্যায় বিচার নিশ্চিত হয়।
বাংলাদেশ বনাম সোলায়মান বিওয়া, এই মামলায় দরখাস্তকারী ২৯৯ দিনের বিলম্বের কারণের মধ্যে মাত্র ২৭ দিন বিলম্ব হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছিল। আদালত মত প্রকাশ করে যে, যেহেতু প্রত্যেক দিনের ব্যাখ্যা দেওয়া হয় নাই। তাই এটা তামাদি আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী পর্যাপ্ত ব্যাখ্যা বলে গণ্য করা যায় না। তাই আদালত বিলম্ব মওকুফের আবেদনটি খারিজ করে দেয়। সুতরাং বিচারিক নজীর বিশ্লেষণ করে বলা যায়, তামাদি আইনের ৫ ধারার অধীন বিলম্ব মওকুফের বিষয়টি আদালতের বিবেচনা এবং সন্তুষ্টির উপর নির্ভর করে। কিন্তু বিলম্ব মওকুফের আবেদন মঞ্জুর করতে আদালত বাধ্য নয়।